এলার্জি কী? এটি কেনো হয়, কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়?

এলার্জি কী এবং এটি কেনো হয়?
এলার্জি কী এবং এটি কেনো হয়?

Topic: এলার্জি কী? এটি কেনো হয়, কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়?

বর্তমান সময়ে এলার্জি হওয়াটা যেনো একটা রুটিনে পরিবর্তন হয়েছে। যে কারও এটি হয়ে যেতে পারে। পৃথিবীতে জনসংখ্যা যত পার্সেন্ট রয়েছে তার মধ্যে তার মধ্যে অর্ধেক লোকই এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই আপনিও আক্রান্ত হয়েছেন এটিতে। এই জন্যই আমার পোস্টটি আজ আপনার সামনে। এলার্জি এমন একটি জিনিস যেটা এমন টাইমে হয় যে সময়ে কোনো কাজ থাকে আর আমরা তখন ওই কাজগুলা করতে পারিনা। এখানে সবথেকে প্রধান কারণ হিসেবে দেখা গেছে মানুষের ভালোভাবে চলাফেরা। তখনই একজন লোকের এলার্জি হয় যখন সে নিজের অবাধ্য হয়ে কাজ করবে বা কোনো কিছু খাবার হিসাবে গ্রহণ করবে। যদি আপনি এলার্জি কী বা তার প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চান তো আজকের এই পোষ্টিটি আপনার জন্য। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন একটু ভালো মানের আইডিয়া জেনারেট করতে পারবেন ব্রেইনে। এবং আপনারও যদি ভবিষ্যতে কোনো এলার্জি হয়ে থাকে তার প্রতিরোধও করতে পারবেন আজকের এই পোষ্টটি পড়ার মাধ্যমে।


এলার্জি কী?

আমাদের শরীরে কিছু রোধ প্রতিরোধের জন্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে যেগুলো জীবাণু দমন করতে সহায়তা করে। আমরা আমাদের জিবনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের খাবার খেয়ে থাকি আর এই খাবার গুলোতেও কিন্তু নিজের অজান্তে কিছু পরিমান জীবাণু থাকে। এই জীবাণু গুলো প্রতিরোধ করতে তারা সক্ষম হয় দেখেই আমাদের তেমন কিছু হয় না।

কিন্তু যখন আমাদের শরীরে এলার্জির সৃষ্টি হয় তখন এই প্রতিরোধ ব্যাবস্থা ক্ষমতা কম থাকার কারণ। ধরেন আপনার আজকে ইচ্ছে হয়েছে বেগুন ভর্তা খাওয়ার বা ইচ্ছে হয়েছে পদ্ম ইলিশ খাবার অথবা আপনি আজকে একটা জামা পড়লেন কিন্তু আ-ধুয়া। ঠিক এরকম কিছু করলেন এতে করে আপনি যেই বেগুন ভর্তা খেলেন ওইটাকে আপনার রোগ প্রতিরোধীরা শত্রু মনে করবে এবং এটির বিরুদ্ধে লড়তে থাকবে। এর ফলে আপনার শরীরে কিছু লালচে বিচি দেখা দিবে। আর এগুলো ঘনঘন চুলকাবে। এমন অবস্থা হবে যে যত চুলকাবেন তত আরও বাড়বে। যা ৩ ঘন্টা থেকে ৬ ঘন্টা জ্বালাতন করবে। এইটাকেই বলে এলার্জি। আশা করি এর পুরোটা ধারণা আপনারা পেয়ে গেছেন।


এলার্জি কেনো হয়?

এলার্জি হওয়ার কারণের কোনো শেষ নেই। এটা বিভিন্ন কারণ হতে পারে। এলার্জি এমন একটা রোগ যেটা সবার হয় না। আর হলেও কমন কোনো কারণ থাকে না। আমি এর আগেই বলেছি এলার্জি হওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে যেসব লোকেদের এলার্জি হয় তারা কিন্তু তাদের লাইফ রুলস মেইনটেইন করে চলে না। যার ফলে অনাবরত তাদের এলার্জি বেড়েই চলেছে।

এলার্জি হওয়ার কারণ হচ্ছে এমন কোনো কিছু খাবার হিসাবে গ্রহণ করা যেটি আপনার শরীরের বিরুদ্ধে যায়। আপনার যদি এলার্জি হয়ে থাকে তাহলে আগে ভাববেন যে কী এমন কাজ করছেন যেটার জন্য এটা হলো। তখন যদি পেয়ে যান যে এটির জন্য হয়েছে তৎক্ষণাৎ এটিকে বর্জন করুন। এটি করবেন না আর অথবা খাবেন না।

এটি শুধু খাবার খাওয়ার মাধ্যমেই হয় না। আপনি যদি পূরানো কাপড় বা ধুয়ো নেই এমন কাপড় পড়েন এক্ষেত্রেও হবে। এরপর আপনার বিছানা পরিষ্কার না করলে। বাহিরে বের হলে ধুলো বালির মাধ্যমেও হয়ে থাকে। পরাগেরাণুর দ্বারাও হয়ে থাকে। ফুলের সুভাষ নেওয়া বা বিভিন্ন জিনিসের সুভাষ নেওয়ার থেকেও জম্মাতে পারে এলার্জি।


এলার্জি হবে এমন কয়েকটি খাবরের নমুনা?

একটা গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসকল লোকের এলার্জি হয়েছে তাদের মধ্যে প্রধান কারণ হিসেবে এসেছে খাবার খাওয়া। আমাদের শরীরে এমন কয়েকটি বস্তু আছে যেগুলো দেহের রোগ প্রতিরোধ করে। আর আমরা যদি যেমন তেমন খাবার খাই, এ খাবার গুলোর মধ্যে কিছু পরিমান খাবার আছে যেগুলো আমাদের দেহের প্রতিষেধক গুলা সহ্য করতে পারে না। এগুলো খাওয়ার ফলে তারা প্রতারোধ করতে অসক্ষম হয় তাই সাথে সাথে দেহের মধ্যে লালচে বিচি দেখা দেয়। তো এর মধ্যে কিছু খাবার উল্লেখ করবো এখানে যেগুলো দ্বারা বিভিন্ন মানুষ এলার্জিতে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এর মধ্যে খাবার গুলো হলো: বেগুন, গরুর মাংস, ডিম, গরুর দুধ, চিনাবাদাম, শেলফিশ জাতীয় মাছ, সয়াবিন, গম ইত্যাদি।


এলার্জি কী ছোঁয়াচে রোগ?

অনেকেরই প্রশ্ন থাকতে পারে যে এলার্জি কী আসলেই ছোঁয়াচে রোগ? তারা মনে করে কারও এলার্জি হলে তার সাথে মেশা যাবে না। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা তা নয়। এলার্জি মোটেও ছোঁয়াচে রোগ না। এটি একজনের হলে অন্য জনকে বাছাই করে চলতে হবে না। যার এলার্জি সে নিজেই নিজকে কেয়ার করলে হবে। তো আমি তাদেরকেই বলতে চাই যারা এলার্জির কারণে একজনের সাথে চলা বন্ধ করে দিছে তারা যেনো বুঝতে পারে এটি আসলে কোনো প্রকারই ছোঁয়াচে রোগ নয়।


এলার্জি কত প্রকার ও কী কী?

এলার্জি মূলত ৪ প্রকার। আমাদের শরীরে এলার্জি তো হয় তাই না। কিন্তু আমরা ঠিক জানি না এটি কত প্রকার ও কী কী? তো আমরা তো জেনেই গেলাম কত প্রকার এলার্জি এখন জানার বিষয়টি হচ্ছ কী কী? তো প্রথম যেটি আছে সেটার নাম ত্বকের এলার্জি ২য় টি হচ্ছে খাবারের এলার্জি এবং ৩য় টি হচ্ছে শ্বাষ প্রশ্বাসের মাধ্যমে ৪র্থ যেটি সেটার পরাগেণুর মাধ্যমে। তো চলুন আগে জেনে নেই এই চার প্রকারের বিস্তারিত সম্পর্কে। এতে করে ধারণার সাথে সাথে জানতে পারবো কীভাবে প্রতিরোধ করে।


১. ত্বকের এলার্জি

ত্বকের এলার্জি বলতে বুঝানো হয়েছে যেগুলো হটাৎ করেই বলা নেই কয়া নেই হয়ে যাই। এগুলো মূলতো কীসের থেকে হয় জানেন কী আপনি? এগুলো হয় যখন আপনি কাপড় পরিধান করবেন তখন যদি সেই কাপড়টি ধুয়া না হয় তাহলে এটা থেকে হতে পারে। এরপর আপনার বিছানা যদি ভালো করে পরিষ্কার না করে ঘুমাতে যান এটি দেখা দিতে পারে। এরপর আরও একটি কারণ আছে বাশঁঝার তো চিনেন তাই না? ওই বাশঁঝারের আশে পাশে গেলেই হয়ে যায় এটি।


২. খাবারের মাধ্যমে

বর্তমানে এলার্জি খাবারের মাধ্যমে বেশী প্রচলিত। বিভিন্ন প্রকার খাবার আছে যেগুলো খেলে বেড়ে যায় এলার্জির প্রবণতা। কিছু খাবার আছে যেমন: বেগুন, গরু মাংস, পদ্ম ইলাশ, ডিম, চাল, গম, ভুট্টা এইগুলো। আপনি যদি চিহ্নিত করতে চান যে ঠিক কোনটাতে আপনার এলার্জি হয় তাহলে এটি করতে পারেন। ধরেন আপনি খেলেন পদ্ম ইলিশ সাথে বেগুনও ছিলো। তখন আপনি বুঝলেন না ঠিক কোনটাতে হয়েছে। এরপর যদি রুটি দিয়ে বেগুন ভর্তা খান তখনও যদি না হয় বুঝে ফেলবেন যে পদ্ম ইলিশেই ছিলো এলার্জির কারণ। এরপর থেকে সেই মাছটা ভুলেও খাবেন না।


৩.  শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে

এলার্জি শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমেও হয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে? শ্বাস প্রশ্বাস যখন নেই তখন বিভিন্ন ধুলিকণা থেকে  শুরু হতে পারে। আপনি যখন রাস্তায় বের হবেন সেখানে ধুলো বালি অভাব থাকবে না। আর যদি আপনার এটিতে এলার্জি থেকে থাকে মুখে মাস্ক পড়ে যাবেন। এতে তেমন একটা ভাবে ইনফেকশন করতে পারবে না আপনাকে।


৫. পরাগেণুর মাধ্যমে

ঋতু পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে ফুলের যেরকম পরাগেণু হয়ে। একটা থেকে অন্যটাই পরিবর্তন হয় অথচ কারও কাছে কেউ না গিয়েই ঠিক তেমনই আপনি যদি ঘরে বসেও থাকেন এলার্জি আপনার হবেই। কারণ পরাগেণু অন্য রকম একটি বিষয় এলার্জির জন্য। আপনার ঘরে অনেক ছৈত্রাক থাকতে পারে এটি পরিষ্কার করুন। এরপর আমরা জানি যে আমাদের শরীর থেকে চামড়া খসে পড়ে মরে যাওয়া চামরা গুলো। তখন যদি আমরা ঘুমাতে যায় তখন এগুলো ইনফেকশন করে। ফলে সাথে সাথেই এলার্জি সৃষ্টি হয়। এটি প্রতিরোধের জন্য সবসময় পরিষ্কার পরিছন্ন থাকতে হবে।


কীভাবে বুঝবো আমার এলার্জি হয়েছে?

এলার্জি বলে কয়ে আসে না। তবে হ্যা আপনি যদি কোনো কিছু খান কিন্তু আপনার শরীরের বিরুদ্ধে তখন আপনার শরীরের মধ্যে লালচে দাগ হবে। এবং এটি চুলকাবে অনেক যত চুলকাবেন আপনি এটি আরও তত ঘন হয়ে ওঠে। এক কথায় অনেক কষ্টকর একটি ব্যাপার। যদি না চুলকায় এগুলো আপনার শরীরের মধ্যে তাহলে ধরে নিবেন এগুলা এলার্জি না অন্যকিছু। এই বিচি বিচি লালচে গোটা গুলাই হচ্ছে এলার্জির একমাত্র লক্ষণ।


এলার্জি কী এবং এটি কেনো হয়?
এলার্জি কী এবং এটি কেনো হয়?


এলার্জি প্রতিরোধের প্রাকৃতিক উপায়?

এলার্জি প্রতিরোধ করার অনেক গুলোই উপায় রয়েছে। এর মধ্যে সর্বসেরা প্রাকৃতিক যেই উপায়টি রয়েছে সেটি আপনাদের সাথে এখন শেয়ার করবো। আপনি যদি এলার্জির কারণে নিজের পছন্দের খাবার গুলো খেতে না পারেন তাহলে এই মেথোড ফলো করেন একমাস দেখবেন যে আপনি সবই খেতে পারছেন।

এটির জন্য আপনাকে প্রথমে এক দেড় কেজির মতো নিমপাতা নিতে হবে। এরপর এগুলোকে রোধে শুকিয়ে মচমচে করতে হবে। করার পর এইবার এগুলাকে গুড়ো গুড়ো করতে হবে যাতে দেখতে পাউডারের মতো লাগে। এর জন্য শীল পাটা ব্যবহার করতে পারেন। নিমপাতা গুলো গুড়ো করার পর কৌটা বা বয়াম এ ভরে রাখুন। আর প্রতিদিন এক থেকে তিন চা চামচ নিমপাতার গুড়ো আর ইসবগুলের ভুসি তিন থেকে চার চা চামস মিশিয়ে খান। এইভাবে একটানা ২৮ দিন খাবেন দেখবেন যে আপনার মাঝে এলার্জি জনিত সমস্যাই নেই আর। এরপর অনায়াসে আপনি ওইসব খাবার খেতে পারেন যেইসব খাবার গুলো খেতে ভয় পাইতেন।


তো ভিজিটরস্ আশা করি পোষ্টটি আপনাদের কাছে ভালো লাগছে। আর যদি কোনো সমস্যা থাকে কমেন্ট করে জানান। চেষ্টা করবো দ্রুত রিপ্লাই দেওয়ার। ধন্যবাদ

(Visited 66 times, 1 visits today)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *