গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল না পাওয়ার কারণ সমূহ

গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল না পাওয়ার কারণ সমূহ
গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল না পাওয়ার কারণ সমূহ


একসময় গুগল এডসেন্স পাওয়াটা তেমন একটি কষ্টকর ছিল না। কিন্তু বর্তমানে এই অ্যাডসেন্স পাওয়ার জন্য কি না করতে হয়? তারপরও কিন্তু এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া যায় না। এর কারণ গুগোল এতটা হার্ড হয়েছে যা কি বলবো। বর্তমানে গুগোল চায় সব কিছু ইউনিক কিন্তু আমরা গুগলকে ইউনিক কোন কিছু দিতে পারি না। এর কারণ হচ্ছে পৃথিবীতে এমন হারে ব্লগিংয়ের সংখ্যা বেড়েছে যার কারণে ইউনিক কন্টেন্ট লেখাটা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। এক সময় শুধু কন্টাক্ট যেকোনো আমি লিখে দিলেই গুগলের অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পাওয়া যেতো। বর্তমানে আর পাওয়া যায় না। এর মধ্যে তফাৎ এটাই যে আমরা ভালো ইউরিক কনটেন্ট লিখতে পারিনা। শুধু কণ্ঠ নয় আরো অনেক কিছুর জন্যই কিন্তু গুগল অ্যাডসেন্স থেকে রিজেক্ট আসে। তো আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদেরকে বলব কি কি কারণে গুগল অ্যাডসেন্স আপনার ওয়েবসাইটটিকে রিজেক্ট করে দিতে পারে।

ডোমেইনের বয়স?

আপনি যদি ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেস এর মধ্যে আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনার 1 টি ডোমেইন রয়েছে। আর এই ডোমেইনটির বয়স যদি তিন মাসের কম হয় তাহলে গুগল এডসেন্স আপনাকে রিজেক্ট করে দিবে। এর জন্য আপনাকে স্পেশালভাবে বলবে না যে আপনার ডোমেইনের বয়স তিন মাস না হওয়ার কারণে রিজেক্ট করে দিয়েছে। বরং তারা যেকোনো একটি কারণ দেখিয়ে রিজেক্ট করে দিবে। তো এজন্য গুগোল অ্যাডসেন্সে এপ্লাই করার আগে সিওর হয়ে নিবেন যে আপনার ওয়েবসাইটে যে ডোমেইনটি রয়েছে সেটির বয়স তিন মাস হয়েছে কি না।

ওয়েব সাইটের থিম?

এরপর যেটির মধ্যে প্রাধান্য দিবেন সেটি হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের থিম। অনেকেই বলে যে থিমটা prefer করে না অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল এর জন্য। কিন্তু না এটা একেবারেই ভুল কথা। গুগোল সবসময় চাইবে যে আপনার ভুল ত্রুটি ধরার জন্য এর কারণ হচ্ছে বর্তমানে গুগলের অসংখ্য পরিমাণ পাবলিশার রয়েছে তো তাদের নতুন করে বা অন্য কোন পাবলিশার দরকার বা প্রয়োজন হয় না। এজন্যই তারা বেশিরভাগ সময় রিজেক্ট দিয়ে থাকে। ওয়েবসাইটের থিমের যে ব্যাপারটি সেটি হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে বা ওয়েবসাইটের কোন গুলোর মধ্যে অন্য কোন থার্ড পার্টি কোড থাকতে পারবে না। যদি থাকে তাহলে রিজেক্ট পেয়ে যাবেন। তাছাড়া অনেক থিম আছে যেগুলোর মধ্যে ভালো করে এডস বসানো যায় না। আর যদি এডস বসানোই না যায় তাহলে গুগল এডসেন্স আপনাকে কেনইবা অ্যাপ্রভাল দিবে। তো এর জন্য ভালো করে আপনার ওয়েবসাইটের থিমটি চেক আউট করে নিবেন।

ইউনিক কন্টেন্ট?

তো গুগল সর্বপ্রথম যে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেয় সেটা হচ্ছে কনটেন্ট। আপনার যদি কন্টেন্ট ঠিক না থাকে তাহলে কোনদিনও গুগলের এডসেন্স অ্যাপ্রুভ পাবেন না। গুগোল সবসময় বলে আসছে যে তাদের দরকার ইউনিক কন্টেন্ট। আপনি যদি ডুবলিকেট কনটেন্ট ইউজ করেন তাহলে তো ভুলেও আপনি অ্যাপ্রুভ পাবেন না তাদের কাছ থেকে। এখানে ইউনিক কন্টেন্ট বলতে বোঝানো হয়েছে যে যেসব কনটেন্ট অন্যান্য ওয়েবসাইটের সাথে মিলবে না। এমন না যে অন্য ওয়েবসাইট থেকে তুলে এনে ওয়ার্ড গুলো উল্টাপাল্টা করে ইউনিক বানিয়ে ফেলবেন। এটা হচ্ছে গুগল সবকিছুই ধরা খেয়ে ফেলবেন। তো এজন্যই বলছি এতো চালাকি করার দরকার নেই নিজে ঠিক করে ইউনিক কন্টেন্ট লিখেন এরপর আপনাকে এপ্লাই করতে যাইতে হবে না গুগল নিজেই আপনাকে অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল দেওয়ার জন্য বসে থাকবে। তো বুঝতেই তো পারছেন যে গুগল এডসেন্স এর কাছে ইউনিক কন্টেন্ট কতটুকু মূল্যবান।

যেসব কন্টেন্ট এপ্রুভ পাবে না?

গুগোল সব কনটেন্ট এর মধ্যে অ্যাপ্রভাল দিলেও হাতে গোনা কয়েকটি কনটেন্ট এর মধ্যে অ্যাপ্রভাল দেয় না। এর মধ্যে প্রথমে রয়েছে মুভি ওয়েবসাইট। আপনি হাজার চেষ্টা করেও মুভি ওয়েবসাইট থেকে অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল নিতে পারবেন না। কারণ গুগোল নিজেই বলে দিয়েছেন যে মুভি ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন ওয়েবসাইট যেগুলোর মধ্যে ডাউনলোড সিস্টেম থাকে এগুলোর মধ্যে ভুলেও অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল দিবেনা। তাছাড়া যেসব কন্টেন্ট এর মধ্যে হ্যাক কথাটি উল্লেখ থাকবে বা হ্যাককে প্রমোট করবে সেসব কন্টেন্টে অ্যাপ্রভাল পাবেনা। এগুলো এড়িয়ে কনটেন্ট লিখলে অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পাওয়ার চান্স থাকবে অনেক। তো সব সময় চেষ্টা করবেন যে এই সকল কন্টেন্ট গুলো এড়িয়ে চলার জন্য।

ভাষার কারণে রিজেক্ট?

এমনও সময় গিয়েছে যে বাংলাদেশের মধ্যে বাংলা কন্টেন্টে অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পাওয়া যেত না। তখন আমাদেরকে ইংরেজী কনটেন্ট লিখতে হতো। এরপর গুগোল আমাদেরকে বাংলা কনটেন্টের উপর এডেসেন্স এল অ্যাপ্রভাল দেওয়া শুরু করলো। ঠিক তেমনি হয়তো অনেক দেশের ভাষাই আছে যা এখনো গুগল সাপোর্ট করেনা। যেসব ভাষার গুগল সাপোর্ট করে এগুলো কয়েকটি নিম্নরূপ লেখা হলো: বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফরাসি, উর্দু, হিন্দি, মালাইয়াম, চাইনিজ ইত্যাদি এসব ভাষা বর্তমানে গুগল সাপোর্ট করতেছে এবং এটির মধ্যে অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল দিচ্ছে। যতই হোক যেহুতু আমরা বাংলাদেশী তাই আমরা বাংলা কনটেন্ট অথবা ইংরেজী এই দুটির মধ্যে থেকে লিখে যাব অন্য কোন ল্যাঙ্গুয়েজে লিখবো না বা পারবোও না।

গুরুত্বপূর্ণ পেইজগুলো?

গুগোল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পাওয়ার জন্য আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে অবশ্যই এই পেইজগুলো থাকতে হবে। তো সেগুলো হচ্ছে About, contact, privacy & policy, disclaimer, terms & condition। এ সকল পেজগুলি যদি আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে না থাকে তাহলে গুগোল আপনার সাইট অ্যাপ্রুভ করবে না। তো সবার আগে শিওর হয় এই পেজ গুলো লিখে ফেলবেন। আর যদি লিখতে না পারেন তাহলে গুগলে বা ইউটিউবে গিয়ে সার্চ দিবেন যে কিভাবে ব্লগারের পেজগুলো ক্রিয়েট করব? এরপরে সেখানে অসংখ্য ভিডিও পেয়ে যাবেন সেখান থেকে দেখে শিখে নিতে পারবেন।  তাছাড়া গুগলে সার্চ যাবেন পেইজ তৈরি করতে চাইছেন এই পেজটি লিখে সাথে জেনারেটর লিখে সার্চ দেবেন দেখবেন যে একটি ওয়েবসাইট আসবে  বা একাধিক ওয়েবসাইট আসবে সেখানে যেকোনো একটি ওপেন করে তৈরি করে নিতে পারবেন আপনার সেই উন্নতমানের পেইজটি। তবে হ্যাঁ এটা খেয়াল রাখবেন যে পেজগুলো ছাড়া গুগল আপনাকে রিজেক্ট দিবে তো দিবেই।

কাস্টম ডোমেইন?

অনেকেই ভিডিওর মধ্যে দেখায় যে তারা ব্লগস্পট ডোমেইন দিয়ে এডসেন্সের থেকে অ্যাপ্রভাল নিয়েছে। হ্যাঁ নেওয়া যায় কিন্তু হাজারের মধ্যে দশ জন নিতে পারে এরকম যদি তাদের ভাগ্য ভাল থাকে আরকি। তা না হলে গুগোল কখনোই সাবডোমেইনে অ্যাপ্রুভ দেয় না এর জন্য দরকার একটি কাস্টম ডোমেইন। টপ লেভেল ডোমেইন অর্থাৎ কাস্টম ডোমেইন বলতে যেগুলোর এক্সটেনশন গুলা .com .net .info .in .xyz ইত্যাদিকে বুঝায়। আপনার ওয়েবসাইটের যদি এরকম ধরনের ডোমেইন থেকে থাকে তাহলে আপনি এপ্লাই করতে পারেন আর যদি না থেকে থাকে তাহলে একটি কাস্টম ডোমেইন কিনে নিন এবং ডোমেইনটির বয়স তিন মাস হতে দিন তারপর এপ্লাই করলে এপ্রোভাল পেয়ে যাবেন।

কতগুলো আর্টিকেল প্রয়োজন

এখানে গুগোল স্পেসিফিক ভাবে বলে নাই যে ঠিক কতটা পোস্ট করলে অ্যাপ্রভাল দেবে। তবে আমার ধারণা অনুযায়ী আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি পোস্ট যদি 500 ওয়ার্ডের হয়ে থাকে তাহলে 40 টা থেকে 50 টা পোস্ট এর মধ্যে পেয়ে যাবেন। আর যদি ওয়েবসাইটের পোষ্টের সংখ্যা 1000 ওয়ার্ড হয়ে থাকে তাহলে মাত্র 30 টি পোস্টে পেয়ে যাবেপ।  আর যদি প্রতিটি পোস্টে যদি 2 থেকে 3 হাজার পোস্ট থাকে তাহলে পেয়ে যাবেন মাত্র 15 টি আর্টিকেলের মধ্যে। আশা করি বুঝতে পারছেন যে আপনার পোষ্টের সংখ্যা অনুযায়ী কতগুলো আর্টিকেল লিখতে হবে।

সর্বশেষে আমি বলতে চাই যে আপনি যদি উপরের এই ধাপ গুলো ভালোভাবে পালন করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পাবেন ইনশাআল্লাহ্। তারপরেও যদি না পান তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন আমি আপনাকে অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল নিয়ে দিবো। ধন্যবাদ মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।

(Visited 71 times, 1 visits today)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *