একজন ব্যাক্তি সব দিক দিয়েই যে পারফেক্ট হবে সেটা কিন্তু না। আর তুমি যদি মনে করো পরীক্ষায় ফেল হলে তোমার লাইফ শেষ, তাহলে একেবারেই ভুল ভাবতেছ। একজন মানুষের জীবন কখনো পরীক্ষা দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় না। পরীক্ষা তো শুধুমাত্র একটি নামমাত্র। জীবনে উন্নতি করতে হলে তোমার দরকার কঠিন পরিশ্রম। এর জন্য দরকার তোমার শক্ত মনোবল। আর তুমি যদি অল্পতেই ভেঙ্গে পড় তাহলে তোমার এই পৃথিবীতে জন্মানো ভুল হয়েছে।
ইতিহাস টেনে দেখো আজ পর্যন্ত পরীক্ষাতে যারা ফার্স্ট হয়েছে তারা কিন্তু লাইফে কিছুই করতে পারে নাই। আর যারা হেলাফেলা করে তাদের স্কুল লাইফ কলেজ লাইফ পার করেছে তারাই দিনশেষে গিয়ে কোন না কিছু একটা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। এখন কি বলবা তুমি তারা কিভাবে সাকসেস পেল। আছে কী এর কোন উত্তর। তো তাই আমি তোমাকে বলছি নিজের উপর বিশ্বাস রাখো তুমি দিন শেষে সফল হতে পারবা।
প্রতিবেশীদের কথার জবাবে কী বলবো?
আমাদের দেশে বেশিরভাগ ছাত্র আত্মহত্যা করে মূলত প্রতিবেশীদের জন্যই। তারা প্রতিনিয়তই খোঁচা দিয়ে থাকে শুধু এটা নিয়ে কেন ছেলেটা ফেল হলো কেন মেয়েটা ফেল হলো। এগুলো নিয়ে সারাদিন প্যারা দিতে থাকে। আর শিক্ষার্থীদের সহ্যের সীমা পার হয়ে গেলে এক সময় তারা নিজের মায়া ত্যাগ করে জীবন দিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায় অর্থাৎ আত্মহত্যা করে ফেলে।
তো আমি তোমাকে বলবো যদি তোমার প্রতিবেশীরা তোমাকে যদি এগুলো নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করে তুমি শুধু জাস্ট সহ্য করে যাবা দিন শেষে তোমার নিজেকে নিজেই পরিচিত করে দেবে ওদের কাছে। শুধু সহ্য করবা আর সময়ের অপেক্ষা করবা এক সময় সাকসেস তোমার কাছে চলে আসবে উল্টাপাল্টা কিছু করার থেকে বিরত থাকবা। ফেল হওয়াটাই কিন্তু সাকসেসের অন্যতম একটি কারণ। কখনো এটা ভেবো না যে ফেল হয়ে গেছো তুমি আর জীবনে কোন সাকসেস করতে পারবা না। তো সবসময় মাইন্ড টাকে পজিটিভ রাখবে। নিজে কঠিন পরিশ্রম করে তোমার প্রতিবেশী ও তোমার আত্মীয়-স্বজন সবাইকে দেখিয়ে দিবে যে তুমি কি জিনিস। মানুষ চাইলেই সবকিছু পারে তুমিও পারবে। তো কোনদিন উল্টাপাল্টা কোন চিন্তা করার কথাও ভাববে না।
ফেইল হওয়ার পর করণীয় কী?
প্রথমত তুমি কোন ডিপ্রেশনে যেতে পারবেনা। ডিপ্রেশনে গেলে তোমার মন চাইবে তুমি অন্য দুনিয়া চলে যাও পৃথিবী ছেড়ে। শুধু ভাববে আরে শুধু একটা বছরই তো গেছে আমার তো আরো কতগুলো বছর পড়ে আছে। পরে না হয় আবার চেষ্টা করব। শুধুমাত্র এই লাইনটা তোমাকে স্বস্তি দিতে পারবে। তাই ডিপ্রেশনে না গিয়ে নিজেকে সান্তনা দেও। তুমি তো আর ইচ্ছা করে ফেল করোনি তোমার ভাগ্যে লেখা ছিল।
পরের বছরের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে তোমাকে। তুমি যে বিষয়ে ফেল করেছ ওই বিষয়টাকে তোমাকে এমনভাবে তোমার পরিচর্যা করতে হবে যাতে তুমিই যেন এই বিষয়ের শিক্ষক হতে পারো। পরবর্তী পরীক্ষাতে যেন এই বিষয়টাতে এ প্লাস আসে এই আশা নিয়ে পড়বা। আর সব সময় নিজেকে ডিপ্রেশন মুক্ত রাখবা। নিজেকে সবসময় মোটিভেশন করবা।
ফেল হওয়া রেজাল্ট পাওয়ার পর প্রথম দুই এক মাস ঘর থেকে বের না হওয়াই উত্তম। কেননা বের হলেই বিভিন্ন মানুষের কটুক্তি শুনতে হবে তোমাকে। তাই প্রথম দুই এক মাস নিজেকে এমন ভাবে তৈরি করো যাতে তোমাকে কেউ কিছু বললেও যেন তোমার কোন যায় না আসে।
পরীক্ষায় ফেইল হবার পর সর্বপ্রথম কী করণীয়?
যখন তুমি তোমার রেজাল্ট হাতে পাবে আর দেখবে তুমি ফেল হয়ে গেছো। অবশ্যই কান্না তো আসবে, তাতে তো তোমার কোন রেজাল্ট পরিবর্তন হবে না। আর যদি তোমার মনে হয় যে আমি যেই পরীক্ষাটিতে ফেইল হয়েছি এটিতে আমি ভালো মার্কস পাওয়ার যোগ্য কিন্তু কেন ফেল আসলো। তাহলে তুমি বোর্ডের এগেনস্টে আবেদন করতে পারবা। তাহলে হয়তো তোমার রেজাল্টের পরিবর্তন আসতে পারে।
আর যদি মনেই কর যে তোমার নিজের কোন আশা নাই যে পাশ হবার তাহলে ডিপ্রেশনে যাওয়ার কোন কারণ নেই। যদিও মন থেকে অনেকটা ভেঙ্গে যাবে তারপরও কোন প্রকার আজেবাজে কাজ করা যাবে না। সোজা তোমার বাসায় চলে যাবে গিয়ে তোমার আম্মু বা আব্বু যাই হোক তাদের কাছে ক্ষমা চাইবে এখন বলবে আমাকে আরো একটি বছর পড়ার টাইম দাও আমি নেক্সট টাইম ভালো ফলাফল অর্জন করব। এরপর বলবা যে প্লিজ আমাকে কটুক্তি বা প্যারা দিওনা কারণ আমি এগুলো সহ্য করতে পারবো না। আমার সুইসাইড করতেও দ্বিধাবোধ হবে না। এরপর তোমার ফ্যামিলির তোমার কষ্ট টা বুঝতে পারবে then তোমাকে আর কিছু বলবে না। হয়তো প্রথম দিন একটু বকাঝকা করবে এরপর নিজেরাই শুধরে যাবে এরপর থেকে তোমার সাথে ভালো আচরণ করবে। তো যেভাবে বলছি এভাবেই করলে ঘর থেকে তেমন একটা চাপ আসবে না।
সবসময় নিজের ফিউচার ব্রাইট করার চেষ্টা করবা। কখনো যেনো এরকম ভুল না হয় প্রতিজ্ঞা করবে নিজের কাছে। সুন্দর ভাবে নিজের কষ্টগুলো সহ্য করে নিজেকে পরিবর্তন করে দেখিয়ে দাও তাদেরকে যাদের থেকে প্রতিনিয়ত লজ্জা অপমান পেয়েছো। ধন্যবাদ তোমাকে এটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। আশা করি এই কথাগুলো তোমার জীবনে কাজে লাগবে।